Information for incoming graduate students

উন্নত বিশ্বের স্বপ্নের মত একটি দেশে আসার পরে কিভাবে সেটেল্ড করতে হবে – এটা নিয়ে আসলে কখনো ভাবতে হবে – কানাডা পা দেবার আগে কখনো ভুলেও ভাবিনি। দেশের মাটিতে বসে মনে হয় – উন্নত বিশ্বের দুনিয়াতে পা দিলে এমনি এমনিই সব হয়ে যাবে। এতো টেনশন নেবার দরকার কি? কিন্তু আসলে কিছু বিষয় নিয়ে আগে থেকেই সবার ধারণা থাকা প্রয়োজন, যাতে বিমান থেকে নেমে কানাডার মাটিতে নামলেই মুশকিল আসান – এই ধারনা একেবারে বদ্ধমুল হয়ে না যায়। নাহ, শুরু দেখে ভয় পেয়ে যাবার কিছুই নেই, কাউকে নিরাশ করা এই লিখার উদ্দেশ্য নয়, বরং কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করার জন্যই এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।

শুরুতেই কিছু কথা বলে নেয়া প্রয়োজন। ভ্যানকুভারের মাটিতে কেনও পা দিবেন – এই প্রশ্নের একটু জবাব দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।

প্রথমত, ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া – এই নাম মানুষের কাছে এখন আর অজানা নয়। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সুনাম করে সময় নষ্ট করা তাই নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়। তাই চলে যাই দ্বিতীয় কারণে ভ্যানকুভারের সৌন্দর্য। বিশ্বের অন্যতম সুন্দর শহর ভ্যানকুভার প্রতি পদে পদে আপনাকে মুগ্ধ করবে কোনও সন্দেহ নেই। চারদিকে সবুজের সমারোহ, ফুলে ফুলে সুরভিত ভ্যানকুভারের সামারের সৌন্দর্য যে কাউকে ক্ষণিকের জন্য হলেও স্তব্ধ করার জন্য যথেষ্ট। (যদিও আমার কাছে এখনো বাংলাদেশের ঘামে ভেজা শহর ঢাকার সৌন্দর্যই সবথেকে বেশি।)

এবার চলে আসি কাজের কথায়। কিভাবে ইউবিসিতে আডমিশন নিবেন – সেটা আজকের আলোচ্য বিষয় নয়। আমি ধরেই নিচ্ছি – আপনি ভ্যানকুভারের নতুন অতিথি, মাত্র কয়েকদিন পরেই হয়তো আপনার ফ্লাইট – তাই চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। কি মনে হচ্ছে – আপনি প্রস্তুত?? তাহলে কয়েকটা জিনিস আমার সাথে মিলিয়েই নিন না – দেখি আপনার প্রস্তুতি কেমন হয়েছে, কি বলেন??

শপিং (পুরো দুনিয়া কি কিনে আনবো? :p )

শুরুতেই লিখতে চাচ্ছিলাম শপিং লিস্ট নিয়ে। কিন্তু কানাডায় অবস্থানরত এক শ্রদ্ধেয় বড় ভাই (কাইয়ুম ভাই) এর মদ্ধেই এক বিশাল লিস্ট তৈরি করে ফেলেছেন যেটা আমরা গ্রুপ এ পরবর্তীতে আপলোড করে দিবো। শুধু কয়েকটা কথা বলার দরকার। কানাডা শীত প্রধান দেশ হলেও, ভ্যানকুভার কিন্তু অন্য এলাকার মত মারাত্মক ঠাণ্ডা নয়। তাই ঠাণ্ডার কাপড় আনার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত ভারি কাপড় আনা উচিৎ নয়। আর সামারে যে জিনিসটা বেশি লাগবে সেটা হলও – টিশার্ট। শীত – গ্রীষ্ম, দুই মৌসুমেই এই জিনিসের কোনও বিকল্প নেই। আর বেশি করে মোজা নিয়ে আসাও ভালো। শপিং নিয়ে তাই আর সময় নষ্ট না করে চলে যাই বাসাবাড়ির সন্ধানে।

ঠাই নেই, ঠাই নেই, কোথাও ঠাই নেই?!!

ভ্যানকুভারে পা দেবার আগে শুরুতেই সমস্যায় পড়তে হয় বাসা নিয়ে। কোথায় পাবো বাসা? কে দিবে আমাকে একবেলা থাকার জায়গা? ভয় নেই, যার বাসা নেই – তার জন্য আছে ম্যাকডোনাল্ডস। ইউবিসি এলাকায় ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে এই খাবারের দোকান। বাসা নেই? টেনশন নেই – নিশ্চিন্তে ঢুকে জান ম্যাক এ। কেউ বের করে দিবে না এটা নিশ্চিত। খাওয়াও হলও, থাকাও হলও!!! :p

কি হলও – দোকানে থাকা পছন্দ হচ্ছে না? তাহলে আপনার জন্য রয়েছে নিচের ওয়েবসাইটগুলো। এই ওয়েবসাইটে ঢুকে আপনাদের প্রভিন্স সিলেক্ট করে বিভিন্ন ক্যাটেগরি এর এপার্টমেন্ট দেখতে পারেন। সবচেয়ে ভাল হয় আপনারা আপনাদের ক্যাম্পাসের কাছাকাছি বাসা পেলে। কিন্তু কিভাবে বুঝবেন – বাসা কই, ইউনি কই আর আপনি কই?? ভয় নেই – ঢাকার অলিগলিতে হারাবার ভয় নেই কানাডাতে। সমস্ত শহরটাই রেক্টেঙ্গুলার শেপ এ ভাগ করা। ঠিকানা খুঁজে পাওয়া খুবই সহজ। আর এর পরেও না পেলে আছে আমাদের গুগল ভাইয়া। 

প্রথমে গুগল ম্যাপে যান (https://maps.google.com/) তারপর বামে Get direction দেখবেন, ক্লিক করে দেখবেন নিচে দুইটা খালি বক্স আসছে । আপনি যেখানে বাসা দেখছেন সে জায়গার অ্যাড্রেসে পোস্টাল কোড আছে সেটা কপি করে প্রথম বক্স এ পেস্ট করেন। তারপর আপনার ক্যাম্পাসের পোস্টাল কোডটা কপি করে নিচের বক্সে পেস্ট করুন। তারপর নিচে Get directionএ ক্লিক করলে দেখতে পারবেন আপনার পছন্দের জায়গাটি আপনার ক্যাম্পাসের কত কাছে ।

কানাডাতে আসার আগে আপনি যদি বাসা বুক দিয়ে থাকেন তাহলে Airport থেকে সরাসরি আপনার apartment এ উঠতে পারবেন। নিচে কিছু ওয়েবসাইট আছে , এইখান থেকে আপনি বাসা খুজে দেখতে পারেন।

1.  www.kijiji.ca/

2. http://www.caprent.com/Properties/

3. Killam properties: http://www.killamproperties.com/

4. http://rentstarlight.com/

এক্ষেত্রে কিছু জিনিস মনে রাখতে হবে। বাসা পাওয়া অনেক সময়ই ভাগ্যের ব্যাপার। কানাডাতে বেশিরভাগ বাসার মালিক রেফারেন্স ছাড়া কিংবা সামনা সামনি না দেখা ছাড়া বাসা দিতে চান না। সেক্ষেত্রে চেনা বড় কেউ থাকলে বলে দেখতে পারেন। আর তা নাহলে আপনাকে খুজতে হবে শর্ট টাইম হোস্টেলগুলো। কিছু হোস্টেল এ বেশ সস্তায় (৩০$/রাত) থাকা যায়। লিঙ্ক দিয়ে দিলাম। (http://samesun.com/backpackers-hostels/vancouver/) প্রয়োজনের সময় এই হোস্টেলগুলোর কোনই বিকল্প নেই। আশা করি এর মদ্ধেই আপনি থাকার কোনও ব্যাবস্থা করে নিয়েছেন। যদি এরপরেও না হয় তবে ইউবিসিতে ইমেইল করে দেখতে পারেন ওরা টেম্পোরারি থাকার ব্যাবস্থা করে দিতে পারে কিনা।

পয়সাপাতি কই রাখি?!

চলে তো আসলেন, বাসাও খুঁজে পেলেন – এখন চিন্তা এতো কষ্টের টাকা পয়সা যা আনলাম দেশ থেকে কিংবা যা পাবো ইউনি থেকে তা কই রাখি?? চিন্তা নেই – এখানেও মুশকিল আসান বাবার আগমন। চলুন দেখে নেই কোন কোন ব্যাংক আছে কানাডাতে। যে ব্যাংকগুলো আসলেই আপনার চোখে পড়বে তার মধ্যে আছে –

  1. RBC (Royal Bank of Canada)

  2. CIBC

  3. Scotia Bank

  4. HSBC

  5. TD Bank

  6. BMO(Bank of Montreal)

স্টুডেন্ট লেভেল এ এই ব্যাংক গুলোর মধ্যে আমার মতে সব থেকে ভালো হলও Scotia Bank। ব্যাংক এ ক্রেডিট কার্ড করা খুবই সহজ, একই সঙ্গে আছে সিন পয়েন্টস জমা হবার ব্যাবস্থা – যা আপনাকে দিবে ফ্রি মুভি দেখার সুযোগ। কোনও ডিপোসিট এর ঝামেলা নেই এবং কোনও মেইন্টেনেন্স ফীও নেই। বলতে গেলে স্টুডেন্টদের জন্য আদর্শ।

সিন? ( নাহ পাপ নয়!!, ইহা সোশ্যাল ইনস্যুরেন্স নাম্বার!)